নিজস্ব প্রতিবেদক:
গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন-হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা আজিজুল হক রানা শাহনেওয়াজ ওরফে রুমানকে ২১ বছর পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই দীর্ঘ সময়ে সে নিজের পরিচয় গোপন করে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছে, ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েছে এবং বিয়ে করে সংসারও করছে। এখনও এই মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত চার জঙ্গি পলাতক রয়েছে। তারা হলো এনামুল, লোকমান, ইউসুস ও মোসায়েক।
বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। গত ১ মার্চ রাজধানীর খিলক্ষেতের খিলক্ষেত বাজার মসজিদের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে দুটি জিহাদি বই, মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ ও কম্পিউটারের হার্ডডিক্স উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
আসাদুজ্জামান জানান, ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সফরসঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠে সভামঞ্চের পাশে মাটির নিচে একটি ৪০ কেজি ওজনের বোমা এবং হেলিপ্যাড (ডহর পাড়া)’র পাশে মাটির নিচে একটি ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখে আসামিরা। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়। বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৪ জনের ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে হত্যার আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রদোহীর মামলায় প্রত্যেকের ২০ বছর করে সাজা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে পাঁচ জন পলাতক ছিল। তাদের মধ্যে মো. আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমানকে (৪৪) গ্রেফতার করলো সিটিটিসি। তবে এখনও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার জন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের বিষয়ে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। তিনি জানান, গ্রেফতার রানা মুফতি হান্নানের সঙ্গে বোমা পুঁতে রাখার দায়িত্বে ছিল সে। বোমা দুইটি উদ্ধারের পর আজিজুল হক শাহনেওয়াজ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার আজিজুল হক রানা ১৯৮৭ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরে জামিয়া আনোয়ারিয়া মাদ্রাসায় নূরানী বিভাগে ভর্তি হয় এবং ওই মাদ্রাসার ওস্তাদ ও হরকাতুল জিহাদের সক্রিয় সদস্য মুফতি হান্নানের অনুসারী মাওলানা আমিরুল ইসলামের সংস্পর্শে আসে। মাওলানা আমিরুল ইসলাম তাকে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করে। ওই মাদ্রাসায় মুফতি হান্নান, আব্দুর রউফ, আব্দুস সালামসহ হরকাতুল জিহাদের বিভিন্ন সিনিয়র সদস্যদের যাতায়াত ছিল এবং মাদ্রাসায় তাদের গোপন বৈঠক হতো।