চ্যানেল ২৬ বিডি.কম : বর্তমান প্রযুক্তির যুগে এআই বা বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে আসল ছবি সম্পাদিত করে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে কিছুক্ষেত্রে চরম বিব্রত হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। প্রযুক্তির মাধ্যম এমনভাবে এডিট করা হচ্ছে যে, সহজেই তা আসল নাকি নকল স্বাভাবিকভাবে তা বুঝা একপ্রকার অসম্ভব।
তবে এডিট করা বা এআই এর মাধ্যমে তৈরি করা ছবি চিহ্নিত করার বেশ কিছু পদ্ধতির করা বলেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। চলুন জেনে নেয়া যাক পদ্ধতিগুলো।
প্রতিফলন ও ছায়ার অবস্থান :
কোনও ছবি পরিবর্তন করা হয়েছে কি-না তা বোঝার ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক আলো একটি নির্দেশক। এক্ষেত্রে প্রথমেই মানুষের চোখের আলোক বিন্দু খেয়াল করুন। তাদের চোখে আলো প্রতিফলিত হবে। যদি ছবির সাবজেক্টের আকার ও অবস্থানের সঙ্গে আলোর অবস্থান না মেলে বা আলো চোখের মধ্যে আলাদা দেখায় তাহলে বুঝতে হবে ছবিটি নকল হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
একটি চিত্রের প্রতিফলিত পৃষ্ঠতে কোনও বস্তু যেভাবে দেখা যায় তার উপর ভিত্তি করেও বোঝা সম্ভব ছবিটি আসল না-কি নকল। ছবিতে একাধিক সাবজেক্ট থাকলে অধিকাংশ সময়ই তাদের ছায়া সঠিক জায়গায় থাকে না। যদিও মনে রাখতে হবে, ছবি একাধিক আলোর উৎস দিয়েও তোলা হয়। তবে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে আলোর উৎস কীভাবে কাজ করছে তাও দেখা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সূর্য যদি কারো পেছনে থাকে তাহলে তাদের কান লাল দেখাতে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক সময়ই অসামঞ্জস্যপূর্ণ আলো ও ছায়া তৈরি করে থাকে। কিন্তু অ্যালগরিদম উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এআই তৈরি মুখগুলো প্রায়শই মানুষের মুখের চেয়ে বেশি বাস্তব বলে মনে হয়।
হাত ও কানের অবস্থান :
নকল ছবি চেনার আরেকটি পদ্ধতি হলো এমন কোনও বৈশিষ্ট্যের সন্ধান করা যা অনুকরণ করা কঠিন। এআই বর্তমানে হাত ও কান রেন্ডার করতে বা তাদের আকার, অনুপাত এবং এমনকি আঙ্গুলের সংখ্যা হিসাব করার ক্ষেত্রেও বেশ দুর্বল। এআইয়ের তৈরি মানুষের ছবিগুলোর অন্যান্য দিক এতটাই হাইপার-রিয়েল হয়ে থাকে যে, এই ভুলগুলো আমাদের কাছে বেশ প্রকটভাবে চোখে পড়ে।
কোনও ছবিতে অঙ্গ বা পোশাকের অবস্থান অস্বাভাবিক কি-না তাও লক্ষ্য করতে হবে। এর মাধ্যমে বোঝা সম্ভব হবে, ছবির কোনও অংশ কোনোভাবে পরিবর্তিত বা ম্যানিপুলেট করা হয়েছে কি-না। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, ত্রিমাত্রিক জগতকে একটি দ্বিমাত্রিক ছবিতে নিয়ে আসার কারণে অনেক সময় জিনিসগুলোকে বেখাপ্পা মনে হতে পারে।
সেটি পরীক্ষা করতে অন্যান্য জিনিসগুলোর ফোকাস ও অবস্থান ছবিতে কীভাবে আছে, তাদের মধ্যকার দূরত্ব পরীক্ষা করা যেতে পারে। ছবিতে কি তারা একই গভীরতায় কাছাকাছি থাকা অন্যান্য বস্তুগুলোর তুলনায় ঝাপসা দেখাচ্ছে, তারা কি একইভাবে হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছে?
মেটাডেটার দিকে তাকান :
ডিজিটাল ছবির কোডের মধ্যে লুকানো থাকে তথ্য, যা নকল ছবি চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। সাধারণত একটি ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলার সাথে সাথে সেই ছবির ফাইলে মেটা ডাটা লেখা হয়।
ছবির 'নয়েজ' :
প্রতিটি ডিজিটাল ক্যামেরা সেন্সরের ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে সূক্ষ্ম ত্রুটি থাকে। এগুলো ছবিতে 'আঙ্গুলের ছাপের' মতো এক প্রকার ভিন্নধর্মী বৈশিষ্ট্য যুক্ত করে। ছবিগুলো নির্দিষ্ট ক্যামেরার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, যা ছবির ম্যানিপুলেটেড বা পরিবর্তিত জায়গাগুলো শনাক্ত করতে সহায়তা করে। এআই তৈরি ছবি অনেক সময়ই খুবই অদ্ভুত দেখতে হয়।
যাচাইকরণ টুল :
গুগলের মতো টেক কোম্পানিগুলোর 'ইমেজ ভেরিফিকেশন টুল' রয়েছে। এটি মানুষকে এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি করা ছবি খুঁজে পেতে সহায়তা করে। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম মেটার নিজস্ব সিস্টেম থেকে আসা এআই তৈরি ছবিগুলোকেও চিহ্নিত করা শুরু করেছে। আর অন্যান্য কোম্পানির এআই সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি ছবির জন্যও তারা একই ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা করছে।
চেয়ারম্যানঃ মোঃ সাইফুল ইসলাম
কার্যালয়ঃ ১০৭ খান ম্যানশন, নবমতলা, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০। ইমেইলঃ channel26ltd@gmail.com মোবাইলঃ 01625555012
Channel 26 LTD.