আবু নাঈম রিপন: নরসিংদী জেলা শহরে অনুমোদন বিহীন আইসক্রিম কারখানা গুলোর বেহাল দশা,দেখার কেউ নেই। অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে নিম্নমানের কাপড়ের রঙ ও কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বাহারি রঙের নামে ও বেনামে আইসক্রিম। শিশু সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
অচিরেই এগুলো আইনের আওতায় আনা অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন নামে বেনামে নরসিংদী পশ্চিম কান্দাপাড়ার বাচ্চু মিয়া ও দত্তপাড়া মহল্লা, ও ইউএমসি, নাগরিয়া কান্দি পলাশ, শিবপুর,রায়পুরা, মনোহরদীতে একাধিক অবৈধ আইসক্রিম কারখানা রয়েছে মালিক পক্ষ প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদন বিহীন ভাবে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে এ ধরনের অবৈধ কর্মকান্ড করে আসছে। এইখানে বিভিন্ন প্রজাতির আইসক্রিম তৈরি করে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন বাজার বন্দরে পণ্য সরবরাহ করে আসছে। রঙ বেরঙের এ সমস্ত আইসক্রিম সকুল পড়ুয়া অবুঝ শিশুরাই বেশি পছন্দ করে থাকেন। আর এসব আইসক্রিম খেয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
এইসকল অবৈধ আইসক্রিম কারখানায় তৈরি আইসক্রিমে খেয়ে বিভিন্ন ধরনের অসুখে ভূগছেন শিশু ও নারী পুরুষ। এতে করে ব্লাড ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের সমস্যা সহ ক্যান্সারের মতো মরনব্যাদী,
মানুষ জীবনে বড়ধরনের ক্ষতি বয়ে আনতে পারে, বলে ধারনা করছেন সচেতন মহল।
শিশুদের মানসিক বিকাশে এ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ,ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে।
এতে করে শিশুদের পাশাপাশি বড়দের জন্য ও স্বাস্থ্যঝুকির কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে। শিশুদের কে এর হাত থেকে রক্ষা পেতে এসকল আইসক্রিম কারখানা গুলোকে আইনের আওতায় আনা জরুরী হয়ে পড়েছে।
আইসক্রিমগুলোতে ক্যামিকেল রঙ ব্যাবহার করার কারনে তা হাতে লাগলে সহজে উঠতে চায় না।
সরজমিনে আইসক্রিম কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, অত্যন্ত স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে নোংরা পানি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে আইসক্রিম। আকর্ষণীয় করতে মেশানো হচ্ছে কাপড়ের রঙ ও চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর ঘনচিনি,আম ও লিচুর স্বাদের জন্য কেমিক্যাল, সাটিক এসিড ও গরুর দুধের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে ভেজাল গুঁড়াদুধ। অপরিচ্ছন্ন বালতিতে খালি হাতেই মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকারক সব উপকরণ। অস্বাস্থ্যকর এসব আইসক্রিম বাহারি সব মোড়কে সরবরাহ করা হচ্ছে জেলার বিভিন্ন দোকানে। প্রচন্ড- দাবদাহে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য শিশুদের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ” এই আইসক্রিম মুখে দেয়। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে তারা। আইসক্রিমে অস্বাস্থ্যকর উপাদান ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন আইসক্রিম কারখানার শ্রমিকরা।
তবে তারা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি। অস্বাস্থ্যকর এসব আইসক্রিমের ব্যাপারে নরসিংদীর পশ্চিম কান্দাপাড়া মহল্লার একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন ঘনচিনি বা সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহার, যা একজন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ঘনচিনি খাওয়ার ফলে মানুষের দ্রুত দৃষ্টিহীনতা ও নিদ্রাহীনতা দেখা দিবে। প্রথমে লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে বমিবমি ভাব, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া তারা আইসক্রিমে কেমিক্যাল রং ব্যবহার করে থাকে। এই রং মানুষের লিভার সিরোসিস ও কিডনি ডিজিজের জন্য দায়ী। দীর্ঘসময় ধরে এ রঙ খেতে থাকলে ক্যান্সার হয়ে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে উক্ত আইসক্রিম কারখানার মালিকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আপনারা কারা তখন আমাদের পরিচয় পেয়ে তিনি বললেন আমি দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই ব্যবসা চালিয়ে আসছি কোথায় কি দিয়ে ঠান্ডা করা লাগে আমি তা জানি আপনারা রিপোর্ট করে পারলে কিছু করেন।
বিএসটিআই ও ভোক্তা অধিকারের পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে দু একটা অভিযান পরিচালিত হলেও এগুলো থেকে যায় প্রশাসনের ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এ বিষয়ে অত্র অঞ্চলের সচেতন মহলের দাবি এধরনের অবৈধ আইসক্রিম কারখানা গুলোকে আইনের আওতায় মনিটরিং ও অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন নরসিংদী জেলার সুশীল সমাজের নাগরিবৃন্দ।